“সহজ ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া– ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর রেসিপি” আমাদের সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি।সুস্থ থাকতে চাইলে খাবারের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি। সহজে তৈরি করা যায় এমন পুষ্টিকর খাবার শুধু শরীরকে শক্তি জোগায় না, মনকেও রাখে সতেজ। ব্যস্ত জীবনে দ্রুত রান্না করা যায়, আবার স্বাস্থ্যও অটুট থাকে – তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন সহজ ও পুষ্টিকর খাবার।
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। প্রতিদিনের খাবারে যদি সঠিক পুষ্টি না থাকে, তবে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং নানা অসুখে ভোগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা য় স্বাস্থ্যকর, প্রাকৃতিক ও কম প্রক্রিয়াজাত খাবার রাখা খুবই জরুরি।সহজ ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং ঘরে তৈরি করা স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি।
অতিরিক্ত তেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই ভাজার পরিবর্তে সিদ্ধ, বেক বা গ্রিল করা খাবার খাওয়া ভালো। এতে খাবারের ক্যালোরি কমে এবং শরীর থাকে হালকা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে |
সবজি আমাদের শরীরে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার সরবরাহ করে। প্রতিদিনের রান্নায় বিভিন্ন রঙের সবজি ব্যবহার করলে খাবার যেমন আকর্ষণীয় হয়, তেমনি শরীরের গুণপুষ্টিও বাড়ে।
গাজর – ১ কাপ (কুঁচি করা)
মটরশুঁটি – ½ কাপ
বাঁধাকপি – ১ কাপ (পাতলা কুঁচি করা)
শিম বা বিনস – ½ কাপ (কেটে নেওয়া)
পেঁয়াজ – ১টি (কুচি করা)
রসুন – ৩ কোয়া (কুচি করা)
আদা – ১ চা চামচ (বাটা বা কুঁচি করা)
অলিভ অয়েল বা ভেজিটেবল অয়েল – ১ টেবিল চামচ
লবণ – স্বাদমতো
গোলমরিচ গুঁড়ো – ½ চা চামচ
কর্নফ্লাওয়ার – ১ টেবিল চামচ (অল্প পানিতে গুলে নেওয়া)
পানি বা ভেজিটেবল স্টক – ৪ কাপ
ধনেপাতা – অল্প (সাজানোর জন্য)
একটি বড় পাতিলে তেল গরম করে তাতে রসুন ও আদা ভাজুন, হালকা সোনালি হলে পেঁয়াজ যোগ করুন।
এখন কাটা গাজর, মটরশুঁটি, বাঁধাকপি ও বিনস দিয়ে ৩-৪ মিনিট নাড়ুন।
৪ কাপ পানি বা ভেজিটেবল স্টক ঢেলে দিন এবং মাঝারি আঁচে সবজি নরম হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
লবণ ও গোলমরিচ দিয়ে স্বাদ ঠিক করুন।
এবার কর্নফ্লাওয়ার গুলে ধীরে ধীরে স্যুপে দিন এবং নাড়তে থাকুন, এতে স্যুপ সামান্য ঘন হয়ে যাবে।
২-৩ মিনিট ফুটে উঠলে নামিয়ে নিন।
উপর থেকে ধনেপাতা ছিটিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
ব্রেড স্টিকস বা টোস্টের সাথে পরিবেশন করলে দারুণ মানাবে।
যারা ঝাল পছন্দ করেন, তারা সামান্য চিলি ফ্লেক্স ছিটিয়ে নিতে পারেন।
ওজন কমাতে চাইলে রাতের খাবারের বিকল্প হিসেবেও খাওয়া যায়।
1)চাল – ১ কাপ (আটপৌরে বা বাসমতী ব্যবহার করতে পারো)
2)মসুর ডাল – ½ কাপ
3)মুগ ডাল – ½ কাপ
4)গাজর – ১ কাপ (কুচি করা)
5)আলু – ১ কাপ (কিউব করে কাটা)
6)ফুলকপি – ১ কাপ
7)মটরশুটি – ½ কাপ
8)কাঁচা লঙ্কা – ২-৩টি (চেরা)
9)পেঁয়াজ – ২টি (কুচি)
10)টমেটো – ১টি (কুচি)
11)আদা-রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
12)হলুদ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
13)জিরা গুঁড়ো – ½ চা চামচ
14)ধনে গুঁড়ো – ½ চা চামচ
15)লবণ – স্বাদমতো
16)ঘি – ২ টেবিল চামচ
17)তেল – ২ টেবিল চামচ
18)শুকনা লঙ্কা – ১-২টি
19)জিরা দানা – ½ চা চামচ
20)তেজপাতা – ২টি
রান্নার প্রণালী:
1)ডাল ভাজা:
প্রথমে মুগ ডাল হালকা সোনালি করে ভেজে নাও। এতে খিচুড়ির স্বাদ ও গন্ধ অসাধারণ হবে।
2)চাল ও ডাল ধোয়া:
ভাজা মুগ ডাল, মসুর ডাল আর চাল ভালো করে ধুয়ে আলাদা করে রাখো।
3)সবজি প্রস্তুত করা:
গাজর, আলু, ফুলকপি ছোট কিউব করে কেটে রাখো। মটরশুটি ফ্রেশ হলে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে।
4)ফোড়ন তৈরি:
কড়াই বা প্রেসার কুকারে তেল গরম করে তেজপাতা, শুকনা লঙ্কা ও জিরা দানা দিয়ে ফোড়ন দাও।
তারপর কুচি পেঁয়াজ দিয়ে সোনালি করে ভাজো।
5)মসলা ভাজা:
আদা-রসুন বাটা, টমেটো, হলুদ, জিরা ও ধনে গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নাও।
6)সবজি যোগ করা:
এবার আলু, গাজর, ফুলকপি ও মটরশুটি দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করো।
7)চাল ও ডাল মেশানো:
ধোয়া চাল ও ডাল দিয়ে ৫ মিনিট ভাজো। এতে খিচুড়ি খেতে অনেক সুস্বাদু হবে।
8)পানি ও লবণ যোগ:
৪-৫ কাপ গরম পানি দিয়ে দাও। (খিচুড়ি পাতলা বা ঘন যেভাবে চাই, পানি তেমন দিতে হবে)
লবণ স্বাদমতো দাও।
9)সেদ্ধ করা:
ঢেকে দিয়ে মাঝারি আঁচে ২০-২৫ মিনিট রান্না করো। চাল-ডাল নরম হয়ে গেলে খিচুড়ি প্রায় তৈরি।
10)শেষ ধাপ – ঘি ও কাঁচা লঙ্কা:
উপরে ঘি ঢেলে দাও, কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ঢেকে ২ মিনিট দম দাও।
গরম গরম ডাল-সবজি খিচুড়ি পরিবেশন করো পেঁপে ভর্তা, বেগুন ভাজি বা আচার দিয়ে।
এটি শুধু পেট ভরানো নয়, বরং অত্যন্ত পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর একটি খাবার।
উপকরণ:
ওটস গুঁড়ো – ১ কাপ
কুচানো গাজর – ১/২ কাপ
কুচানো ক্যাপসিকাম – ১/৪ কাপ
কুচানো পেঁয়াজ – ১/৪ কাপ
ডিম – ১টি
দুধ বা পানি – ১/৪ কাপ (মিশ্রণ সামঞ্জস্যের জন্য)
লবণ – স্বাদমতো
গোলমরিচ – ১/৪ চা চামচ
অলিভ অয়েল – ১ টেবিল চামচ (ভাজার জন্য)
প্রস্তুত প্রণালী:
একটি বড় বাটিতে ওটস গুঁড়ো, কুচানো গাজর, ক্যাপসিকাম, পেঁয়াজ, লবণ ও গোলমরিচ ভালো করে মিশিয়ে নিন।
ডিম এবং দুধ/পানি যোগ করে ঘন ব্যাটার তৈরি করুন। যদি ব্যাটার খুব ঘন হয়, সামান্য দুধ বা পানি দিয়ে সামঞ্জস্য করুন।
ননস্টিক প্যানে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল গরম করুন।
প্যানে ২–৩ টেবিল চামচ ব্যাটার দিয়ে ছোট প্যানকেক বানান। প্রতিটি দিক ২–৩ মিনিট করে সোনালি বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
গরম গরম পরিবেশন করুন। চাইলে পাশে দই বা সবুজ চাটনি রাখুন।
পরামর্শ:
চাইলে ওটসের বদলে হালকা ময়দা বা চিয়া সিড ব্যবহার করে স্বাদ ও পুষ্টি বাড়ানো যায়।
প্যানকেকের ভিতরে ছোট ছোট সবজি রাখলে বাচ্চাদেরও সহজে খেতে উৎসাহিত করা যায়।
প্রতিদিন মিলে এক বাটি সালাদ রাখুন।ভাজা খাবারের বদলে গ্রিল বা স্টিম করা পদ খান।সফট ড্রিঙ্কস বাদ দিয়ে লেবু পানি বা ডাবের পানি পান করুন।প্রতিদিন অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করুন।অল্প কৌশল ও সচেতনতা নিয়েই প্রতিদিনের খাবারকে সহজ ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া – ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর রেসিপি করে তোলা যায় ।
উপসংহার
মনে রাখবেন-খাবার মানে শুধু ডায়েট নয়, বরং এটি একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা রুটিন।সহজ ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং ঘরে তৈরি করা স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি।
খাবার হতে হবে যেমন সহজ পুষ্টিকর, তেমনি সুস্বাদুও।আপনি যদি ওজন নিয়ন্ত্রণ, ইমিউনিটি বৃদ্ধি, বা সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখতে চান — এই পেজটি আপনার জন্য Runnar Hut.
ভূমিকা ১-২ বছরের শিশুর খাবার তালিকা /শিশুর-বয়স-অনুযায়ী-খাবারের-তালিকা করা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত…
আজকের দিনে Paneer Recipe বা পনির রেসিপি সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়। ভেজিটেরিয়ান হোক কিংবা নন–ভেজ,…
ভেগান ও প্ল্যান্ট-বেইজড লাইফস্টাইলের ভবিষ্যৎআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতনতা, পরিবেশ রক্ষা এবং প্রাণীর অধিকার—এই…
ভেগান মিক্সড ভেজিটেবল রেসিপি | Mixed Vegetable Curry (Vegan Recipe) সহজ ও স্বাস্থ্যকর ভেগান মিক্সড…
ভেগান ও প্ল্যান্ট-বেইজড রান্না: স্বাস্থ্যকর ও টেকসই জীবনযাত্রার মূল চাবিকাঠি “আজকাল সারা বিশ্বে vegan and…
স্বাস্থ্যকর ও সহজ ঘরোয়া রান্না কি? আজকাল ব্যস্ত জীবনে সবাই চায় কম সময়ে সুস্বাদু ও…